রাজশাহীতে ভারতের সহকারী হাই কমিশনের উদ্যোগে আদিবাসী নেতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামী বিরসা মুন্ডার ১৫০তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। বুধবার সকালে রাজশাহীতে অবস্থিত ভারতের সহকারী হাইকমিশনারের কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সহকারী হাইকমিশনার বিরসা মুন্ডার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। পরে তাঁর জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তারা বলেন, বিরসা মুন্ডা ছিলেন ভারতের ঝাড়খণ্ড অঞ্চলের এক কিংবদন্তি আদিবাসী নেতা, যিনি উনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে “উলগুলান” বা মহান বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে মুন্ডা সম্প্রদায় জমির মালিকানা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের দাবিতে ঐতিহাসিক আন্দোলনে অংশ নেয়।
বক্তারা আরও বলেন, বিরসা মুন্ডা কেবল ভারতের আদিবাসী সমাজের নায়ক নন, তিনি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার নিপীড়িত জনগণের প্রতীক। তাঁর সংগ্রামী জীবনচেতনা আজও তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে।
তারা আরো বলেন, বিরসা মুন্ডা শুধু একজন স্বাধীনতা সংগ্রামীই নন, তিনি ছিলেন সমাজ সংস্কারক, যিনি আদিবাসী সমাজে শিক্ষা, ঐক্য ও আত্মসম্মানের চেতনা জাগিয়ে তুলেছিলেন। তাঁর জীবন ও দর্শন আজও মানবতার এক আলোকবর্তিকা।
অনুষ্ঠানে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার মনোজ কুমার, রাজশাহী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেলেনা আকতার, গোদাগাড়ীর দিগঘরী রাজা পরিষদের সভাপতি শ্রী নিরেন চন্দ্র খালকো, উপজাতি যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নিরেন চন্দ্র পাহান মুন্ডা, অদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিচিত্রা তিরকি প্রমুখ।
আলোচনার পর ভারত ও বাংলাদেশের শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আদিবাসী নৃত্য, সংগীতের মাধ্যমে বিরসা মুন্ডার সংগ্রামী জীবনচেতনা তুলে ধরা হয়।
উল্লেখ্য, বিরসা মুন্ডার জন্ম ১৮৭৫ সালের ১৫ নভেম্বর ভারতের ঝাড়খণ্ডের উলিহাতু গ্রামে। তিনি মাত্র ২৫ বছর বয়সে ১৯০০ সালে ব্রিটিশ কারাগারে রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। ভারতের সরকার তাঁর জন্মদিনকে “জনজাতি গৌরব দিবস” হিসেবে পালন করে আসছে।