ক্যামেরার ক্লিক, হাসির ঝলক আর স্মৃতি ধরে রাখার ব্যস্ততায় ভরে উঠেছে রাজশাহীর কালেক্টরেট বই মেলা প্রাঙ্গণ। বই হাতে নিলেও তরুণ-তরুণীদের চোখ আটকে যাচ্ছে ফটো কর্নারে। মেলার সব থেকে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে শির্ক্ষাথী ও তরুণ-তরুণীদের ফটোসেশন কর্নার। বই দোকানিরা বলছেন, বেচা বিক্রি ভালো হচ্ছে না। তবে আয়োজকরা বলছেন, আমরা যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি, অন্যান্য বইমেলার তুলনায় বেচা বিক্রি ভালো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মেলা ঘুরে দেখা যায়, তরুণ-তরুণীদের দলে দলে আগমন। কেউ পছন্দের লেখকের নতুন বই খুঁজছেন, কেউবা হাতে নিয়ে দেখছেন নতুন প্রকাশনার বই। আবার অনেকে বন্ধুদের সঙ্গে গল্পে মেতে উঠেছেন কিংবা স্মৃতি ধরে রাখতে তুলছেন অসংখ্য ছবি। মেলার এক পাশে সাজানো ফটোসেশন কর্নারে চলছে সেলফি ও গ্রুপ ফটো তোলার ব্যস্ততা। ছোটদের সঙ্গে আসা অভিভাবকরাও উপভোগ করছেন মেলার প্রাণবন্ত পরিবেশ। বিকাল গড়াতে না গড়াতেই মেলা মাঠ ভরে যায় মানুষের ভিড়ে। অনেকেই বলেছেন, দীর্ঘদিন পর এমন প্রাণবন্ত আয়োজন রাজশাহীতে উপভোগ করতে পারছেন তারা। প্রচলন প্রকাশনী কর্মচারী জানান, এখানে বই বিক্রির চেয়ে মানুষ ঘুরতে আসছেন বেশি। তারা বই দেখছে এটাই আমাদের খুব ভালো লাগছে। বই কিনতেই হবে এমন কথা নাই। তবে অন্য বই মেলার তুলনায় এখানে পরিবার নিয়ে অনেক মানুষ আসছে। বইমেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থী আয়েশা বলেন, অনেকদিন পর বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে ঘুরতে এলাম। শাড়ি পরে সাজগোজ করে এসেছি, তাই একটু ছবি তুলে রাখছি স্মৃতি হিসেবে। এখানে নানা আয়োজন দেখে সত্যিই ভালো লাগছে।
শিখা প্রকাশনী কর্মচারী পারভেজ বলেন, মানুষের ভিড় প্রচুর, তবে বেশিরভাগই ঘুরতে আসছেন বা সন্ধ্যার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে আসছে। স্থানীয় দর্শনার্থী হুমায়ূন আহমেদ বলেন, বাড়ির পাশেই বইমেলা, ভাবলাম একটু ঘুরে আসি। এবার নতুন কিছু আয়োজন আছে, তাই অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন।
আয়োজকরা বলছেন, আমাদের বই বিক্রি ভালো হচ্ছে। অনেক দূর দুরন্ত থেকে মানুষ আমাদের বইমেলায় আসছেন। আমাদের খুব ভালো লাগছে তরুণরা তরুণরা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বের হয়ে বইমেলায় এসে বইগুলো দেখছে। বিভিন্ন মানুষকে বইয়ের মেলায় নিয়ে আসতে পারছি এবং তারা এই বইমেলায় উপভোগ করছে এটা দেখেও আমাদের ভালো লাগছে।
জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের আয়োজনে ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসন এ বইমেলার আয়োজন করেছে। মেলা চলবে আগামী ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকে, আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়। এবারের মেলায় ১১টি সরকারি দপ্তর ও ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানসহ মোট ৮১ টি স্টলের অংশগ্রহণ রয়েছে।